Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পাট বীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন

পাট বীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন
কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী

স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকীতে জানাই অশেষ বিনম্র শ্রদ্ধা। একই সাথে ১৫ আগস্ট ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞে শহীদ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুনেছা মুজিবসহ সকল শহীদের প্রতি জানাই গভীর  শ্রদ্ধা।
বাঙালি জাতির অবিস্মরণীয় মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই কৃষি ও কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন এবং আজকের কৃষির যে অভূতপূর্ব  সাফল্য অর্জিত হয়েছে, বাংলাদেশ যে দানাদার খাদ্যে  স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে তার মূলভিত্তিটাই স্থাপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু  ‘সবুজ বিপ্লব’ আন্দোলনের মাধ্যমে।
‘পাট বীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন বিষয়ক আলোচনার শুরুতে বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব অর্থকরী ফসল পাটবিষয়ক বঙ্গবন্ধুর কয়েকটি উক্তি স্মরণ করতে চাই। ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমাদের মাটি আছে, আমার সোনার বাংলা আছে, আমার পাট আছে, আমার গ্যাস আছে, আমার চা আছে, আমার ফরেস্ট আছে, আমার মাছ আছে, আমার লাইভস্টক আছে। যদি ডেভেলপ করতে পারি, ‘ইনশাআল্লাহ, এদিন থাকবে না।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘এ যাবত বাংলার সোনালী আঁশ পাটের প্রতি ক্ষমাহীন অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হয়েছে। বৈষম্যমূলক বিনিয়োগ হার এবং পরগাছা ফড়িয়া-বেপারীরা পাটচাষিদের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করেছে। পাটের মান, উৎপাদন হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির বিশেষ প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। পাট ব্যবস্থা জাতীয়করণ, পাটের গবেষণার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ এবং পাট উৎপাদনের হার বৃদ্ধি করা হলে জাতীয় অর্থনীতিতে পাট সম্পদ সঠিক ভূমিকা পালন করতে পারে।’ স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের শূন্য হাতে হাল ধরেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অসামান্য দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বে বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন, সেটিকে আমরা বঙ্গবন্ধুর কৃষি দর্শন বা কৃষি ভাবনা হিসেবেই জানি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার প্রকৃত অর্থেই কৃষি ও কৃষকবান্ধব সরকার। তাঁর নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় বঙ্গবন্ধুর দেখানো সবুজ বিপ্লবের পথ ধরেই কৃষির অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও প্রসংশিত হচ্ছে।
কৃষি উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় কৃষি মন্ত্রণালয় বহুমুখী কর্মসূচি কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে বাস্তবায়ন করছে। পাট বীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন তেমনই একটি কর্মসূচি যা আগামী তিন বছরে বাস্তবায়নের রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে।
পাট বাংলাদেশের একটি পরিবেশবান্ধব প্রধান অর্থকরী ফসল। কারণ পাট মাটিতে জৈবপদার্থ যুক্ত করে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাট ও পাটজাত দ্রব্য পরিবেশবান্ধব অর্থাৎ পরিবেশ দূষণ রোধ করে। পাটভিত্তিক শস্যবিন্যাস উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং ঈড়২ শোষণ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করে।
এছাড়াও পাট বৃহৎ শিল্পের ও হস্তশিল্পের কাঁচামাল, পাট রপ্তানি আয়ের অন্যতম উৎস। প্রায় ৪০ লাখ কৃষক পাটচাষে সম্পৃক্ত এবং পাট কর্মসংস্থানে সাহায্য করে। পাটখড়ি এবং পাটের পাতার বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে পাট চাষের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তোষাপাটের উন্নত জাত কৃষকের নিকট গ্রহণযোগ্য জাত ও তোষা পাটের প্রয়োজনীয় বীজের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইঔজও) কর্তৃক উদ্ভাবিত- দেশী পাট (ঈযড়ৎপযড়ৎঁং পধঢ়ংঁষধৎরবং) এর ৯টি, তোষা পাট (ঈড়ৎপযড়ৎঁং ড়ষরঃড়ৎরঁং) এর ৮টি, কেনাফ (ঐরনরংপঁং পধহহধনরহঁং) এর ৪টি, মেস্তা (ঐরনরংপঁং ঝধনফধৎরভভধ) এর ৩টি জাত রয়েছে। এছাড়া বিজেআরআই উদ্ভাবিত ৩টি দেশী পাটশাক জাত এবং বিনা উদ্ভাবিত ১টি বিনা পাটশাকের জাত আছে।
বাংলাদেশে মূলত তোষা পাটের ক্ষেত্রে প্রায় ৯০% জমিতে ইন্ডিয়া থেকে প্রতি বছর আমদানিকৃত জেআরও-৫২৪ জাতের চাষ হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে কমবেশী প্রায় ৩০০০ মে. টন জেআরও-৫২৪ জাতের তোষা পাটবীজ ভারত থেকে আমদানি করা হয়। এ ছাড়াও বিগত ৩-৪ বছর ধরে প্রায় ১০০০ টন মেস্তার বীজ আমদানি করা হয়।
২০১৮ সালে বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) নামে একটি উচ্চফলনশীল উন্নত জাতের তোষাপাট উদ্ভাবিত হওয়ায় এবং ইতোমধ্যে কৃষক কর্তৃক জাতটি গ্রহণযোগ্য হওয়ায় কৃষি মন্ত্রণালয় আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে তোষাপাট বীজের আমদানি নির্ভরতা কাটিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করেছে এবং মাননীয় কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশনায় রোডম্যাপ বাস্তবায়নের কৌশল ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন তোষাপাট বীজ উৎপাদন, বীজ বর্ধিতকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং কৃষক পর্যায়ে দ্রুত সম্প্রসারণের দায়িত্ব পালন করবে। রোডম্যাপ অনুযায়ী ব্রিডার পাটবীজ উৎপাদন করবে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, ব্রিডার বীজ হতে ভিত্তি ও প্রত্যায়িত বীজ উৎপাদন করবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এবং কৃষক পর্যায়ে জাত সম্প্রসারণ, কৃষক পর্যায়ে বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ, কৃষক প্রশিক্ষণ প্রদান করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
পাট বীজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য বিজেআরআই কর্তৃক আগামী ৩ বছরে ৪০০ কেজি ব্রিডার বীজ এবং বিএডিসি কর্তৃক ৪৫ মে. টন ভিত্তিবীজ, ৪০৫০ মে. টন প্রত্যায়িত/টিএলএস বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মূলত বছরে ৪৫০০ হতে ৫০০০ মে. টন পাট বীজের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৬ থেকে ৭ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে শতকরা ৮৮ ভাগ তোষাপাট এবং শতকরা ১২ ভাগ জমি দেশী পাটের চাষ করা হয়।
এখানে আরও উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশের ১ বিঘা জমিতে ১ কেজি বীজ ছিটিয়ে বপন করা হয় এবং পরবর্তীতে দুই মাস বয়স হলে পাটক্ষেত বাছাই করে পাতলা করে দেয়া হয়। কিন্তু বীজ বপন যন্ত্রের ব্যবহার করে ৮০% অঙ্কুরোদগম ক্ষমতাসম্পন্ন ভালো বীজ সারিতে বপন করলে বিঘাপ্রতি কাক্সিক্ষত পাটগাছের সংখ্যা (৩ লাখ) ঠিক থাকে এবং ৭৭৫ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে বছরে প্রায় ১০০০ মে. টন তোষা পাট বীজ কম লাগবে। এছাড়া পাটবীজ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য আরও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে যেগুলো বাস্তবায়ন করে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের নির্দেশনা প্রদান করেছেন মাননীয় কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি। চ্যালেঞ্জগুলো নিম্নরূপÑ
(১)  দক্ষতা এবং দ্রুততার সাথে কৃষকপর্যায়ে উন্নতজাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা।
(২)  পাটের ছাল ছাড়ানোসহ পাট উৎপাদনে যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি করা, পাট জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়ানো, পাটের উপজাত, পাটকাঠি, পাট পাতার ব্যবহারে (উদ্ভাবনী) প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা।
(৩)  চাহিদাভিত্তিক পাটের উন্নতজাত উদ্ভাবনে গবেষণা জোরদারকরণ।
(৪)   পাটবীজ উৎপাদন এলাকা এবং পাটের আঁশ উৎপাদন এলাকা চিহ্নিত করে পাট ফসলভিত্তিক লাভজনক ক্রপিং প্যাটার্ন উদ্ভাবন ও বাস্তবায়ন করা।
আশা করা যায় পাটবীজের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের রোডম্যাপ বাস্তবায়িত হলে পাটের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। গ্রামীণ অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে।
‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার
কৃষি হবে দুর্বার।’
পরিচালক, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা। ফোন : ৫৫০২৮২৬০, ই-মেইল : diris@is.gov.bd

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon